ভারতের লোকসভা ভোট শেষ হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার সপ্তম ও শেষ দফার ভোটে সাত রাজ্য ও
একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৭ আসনের প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। কাল ভোট হবে
ওডিশা বিধানসভার ৪২ আসনেও। এই রাজ্যে জোর প্রতিদ্ব›িদ্বতা রয়েছে বিজু জনতা দলের সঙ্গে
বিজেপির। শেষ পর্বের ভোটের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই, দুটি কারণে।
প্রথমত, উত্তর প্রদেশের বারানসি আসনে বিজেপির প্রার্থী তিনি। ২০১৪ সালে গুজরাটের বরোদা
ছাড়াও তিনি দাঁড়িয়েছিলেন বারানসিতে। দুই আসনেই জেতার পর বরোদা ছেড়ে বারানসিকেই তিনি
আঁকড়ে ধরেন। এবার জিতলে সেটা হবে তাঁর জয়ের হ্যাটট্রিক।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও তিনি ক্ষমতাসীন
থাকার হ্যাটট্রিক করতে চাইছেন। দ্বিতীয় কারণ, দক্ষিণ ভারতের শেষ ভ‚খণ্ড কন্যাকুমারীতে সমুদ্র
মধ্যে অবস্থিত বিবেকানন্দ রক-এ গিয়ে তাঁর ধ্যান করার সিদ্ধান্ত। গত বৃহ¯পতিবার রাত থেকে
সেখানে শুরু হয়েছে তাঁর ধ্যানপর্ব ও আরাধনা। শনিবার ভোটপর্ব সাঙ্গ হলে তিনি ধ্যানভঙ্গ করবেন।
ধ্যানের এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী বলে বিরোধীরা সমস্বরে প্রতিবাদী হলেও নির্বাচন
কমিশন (ইসি) এর মধ্যে দোষের কিছু দেখেনি। বিরোধীদের দাবি ছিল, ধ্যানমগ্ন প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও
খবর প্রচার বন্ধে কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করুক। ইসি তা-ও মানেনি। ফলে শুক্রবার সকাল থেকেই
গণমাধ্যমে প্রচারের শীর্ষে মোদি। প্রচারের এই তীব্রতায় শেষ পর্বের ভোটের প্রচার যেন গৌণ হয়ে
পড়েছে।
প্রচারে গৌণ হলেও শেষ পর্বের ভোটের গুরুত্ব কিন্তু হ্রাস পায়নি। শেষ দফাতেই পড়ছে উত্তর
প্রদেশের বারানসিসহ বাকি মোট ১৩ আসনের ভোট। ভোট হতে চলেছে পাঞ্জাবের ১৩ আসনেও।
বিজেপি যে রাজ্যে এবার আসন বাড়াতে ব্যগ্র, সেই পশ্চিমবঙ্গের ৯ আসনেও আগামীকাল ভোট।
একই সঙ্গে ভোট গ্রহণ হবে বিহারের ৮, ওডিশার ৬, হিমাচল প্রদেশের ৪ ও ঝাড়খন্ডের ৩ এবং
কেন্দ্রশাসিত চীগড়ের একমাত্র আসনে। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও শেষ পর্বের উলেখযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে
রয়েছেন হিমাচল প্রদেশে অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, উত্তর প্রদেশে
লালু যাদবের কন্যা মিশা ভারতী ও বিজেপির অভিনেতা সাংসদ রবি কিষেণ, চীগড়ে কংগ্রেসের
মণীশ তিওয়ারি এবং পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বহুদিন পর পাঞ্জাবের ১৩ আসনে ভোট হচ্ছে জোটবিহীন। অকালি দল ও বিজেপির জোট ভেঙে
গেছে। দীর্ঘকাল পর এই দুই দল পর¯পরের প্রতিদ্ব›দ্বী। আবার দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাট ও চীগড়ে
কংগ্রেসের সঙ্গে আম আদমি পার্টির (আপ) জোট হলেও পাঞ্জাবে তারা আলাদা লড়াই করছে। ফলে
প্রতিটা আসনেই লড়াই এবার চতুর্মুখী। এই লড়াইয়ে এক অন্য মাত্রা যোগ করেছে খদুর সাহিব
কেন্দ্র। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃত পাল সিং। অমৃত
পাল বর্তমানে আসামের ডিব্রগড় কারাগারে বন্দী।