মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জমিজমা, বিয়ে ভাঙ্গা ও হোটেলে খাবার দেরীতে দেয়াকে কেন্দ্র করে পৃথক সংঘর্ষে নারীসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মামুনর রশিদ (৪৫) ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম (৪০) কে লাঠি দিয়ে দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন আপন ভাই কাওছার আলী ও ওয়াজেদ আলী। আহত মামুনর রশিদ ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় মামুনর রশিদ বাদী হয়ে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। একই দিন সকাল ৯ টার দিকে গাংনী উপজেলার রাইপুর গ্রামে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারের মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ এনে একই পরিবারের ৩জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে । আহতরা হলেন-রাইপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী জুলেখা খাতুন (৫০), ছেলে লিখন হোসেন (২১)।
আহত লিখন জানান, প্রতিবেশী হিন্দু ধর্মাবলম্বী আনন্দ দাশের মেয়ে বন্যা দাশের বিয়ে ভেঙ্গে গেছে। আনন্দ দাশ তার মেয়ের বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে প্রথমে আমার মাকে মারধর করেন। পরে আমার বাবা ও আমাকে মারধর করেন। আনন্দ দাশের বাবা সুশান্ত দাশ ও পরি দাশ সবাই মিলে আমাদের উপর হামলা করেন। একই দিন চাঁদপুর গ্রামের মাদ্রাসার বাউন্ডারির মধ্যে গরু যাওয়াকে কেন্দ্র সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে একই পরিবারের নারীসহ ৩জনকে পিটিয়ে আহত করেছেন গরুর মালিক মাজেদ আলীর ছেলে আক্তারুজ্জামান। আহতরা হলেন- ইলিয়াছ হোসেন (৫৫), তার স্ত্রী নাজেরা খাতুন (৫০) ও পুত্রবধূ রুমি খাতুন (৩০)। এদের মধ্যে নাজেরা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ইলিয়াছ হোসেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।
মঙ্গলবার বিকালের দিকে এ উপজেলার গাঁড়াডোব গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে রফিকুল ইসলাম (৪৫) ও তার স্ত্রী হামিদা খাতুন (৪০) কে পিটিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষরা। আহতরা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । দুপুরের দিকে গাংনী উপজেলা শহরের সোবহান হোটেলে খাবার দিতে দেরী হওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- গাংনী পৌর এলাকার চৌগাছা গ্রামের আমিরুল শাহের ছেলে আশিকুজ্জামান পিন্টু, (৩০), একই গ্রামের ইন্টু রাজ (২), সোবহান হোটেলের কর্মচারী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে সুজন (২৬) ও আরেক হােটেল কর্মচারি সুজন হোসেন (৩০)। এদের মধ্যে পিন্টু ও ইন্টুরাজকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং হোটেলের কর্মচারী সুজনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।